
নকলা উপজেলার গণপদ্দী এলাকায় বর্ষার শুরুতে নৌকা তৈরি করছেন স্থানীয় কারিগররা। ছবি: সংগৃহীত
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি :
শেরপুরের নকলা উপজেলার নিচু ও নদী তীরবর্তী এলাকায় বর্ষা মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন নৌকা তৈরির কারিগররা। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নৌকার চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি পুরনো নৌকা মেরামতের কাজও বেড়েছে কয়েকগুণ।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার গণপদ্দী, নকলা, উরফা, বানেশ্বরদী, চরঅষ্টধর ও চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে দিন-রাত চলছে নৌকা তৈরির কাজ। নিচু এলাকা ও নদী-খাল-বিলপাড়ের মানুষ বন্যা বা জলাবদ্ধতার সময় চলাচলের জন্য নতুন নৌকা তৈরি করছেন, আবার পুরনো নৌকাগুলো মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করে তুলছেন কেউ কেউ।
কাঠমিস্ত্রি আয়নাল হক বলেন, ‘‘সারা বছর কাঠের কাজ করলেও বর্ষার শুরুতেই নৌকার চাহিদা বেড়ে যায়। এবারও নতুন নৌকা তৈরির পাশাপাশি পুরনো নৌকা মেরামতের কাজ করছি। তবে কাঠ ও সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচও বেড়েছে।”
স্থানীয় মৎস্যজীবী আব্বাস আলী জানান, আগে চায়রা বিলে বড় বড় দেশি মাছ থাকায় দূর-দূরান্তের জেলেরা নৌকা ভাড়া নিতেন। এখন নদ-নদী ও খাল-বিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় দেশি মাছও কমে গেছে। ফলে মাছ ধরার জন্য নৌকার ব্যবহার কমলেও বর্ষা ও জলাবদ্ধতার কারণে মানুষ চলাচলের জন্য ছোট নৌকা কিনছেন।
কাঠমিস্ত্রি আলমাছ আলী জানান, ‘‘ছোট ডিঙি নৌকার চাহিদাই বেশি। গুনগত মান ভেদে প্রতিটি নৌকা তৈরি করতে ৭ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। কাঠ, বাঁশ, লোহা, আলকাতরা, তারকাটাসহ সব উপকরণের দাম এখন বেশি। তবু বর্ষায় চলাচলের কথা ভেবে মানুষ নৌকা তৈরি ও মেরামত করছেন।”
স্থানীয়রা জানায়, আগে প্রায় প্রতিটি পরিবারে একটি করে নৌকা থাকতো। এখন নদ-নদীতে পানি কমে যাওয়ায় নৌকার ব্যবহার কমলেও প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে আবারও পুরনো ঐতিহ্য ফিরে আসে। ফলে নৌকা তৈরির কারিগরদের কর্মচাঞ্চল্য কিছুটা হলেও টিকে আছে।