নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:
আর মাত্র একদিন পরেই (২১ মে মঙ্গলবার) ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। প্রচারণার একদম শেষ মুহূর্তে এসে প্রার্থীসহ কর্মী সমর্থকরা ভোটারদের নজর কাড়তে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে কেউ কেউ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় শেরপুরের নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ তাঁর নির্বাচনি প্রতীক দোয়াত-কলম এর পক্ষে জনগণের রায় বাড়াতে আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
রবিবার (১৯ মে) দুপুরের দিকে পৌর শহরের চন্দ্রকোনা মোড়ে স্থাপিত তাঁর নির্বাচনি প্রচারণা কেন্দ্রে অগণিত ভোটার, কর্মী-সমর্থক, দলীয় নেতা-কর্মী ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার ঘোষণা করেন।
এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ তাঁর লিখিত ইশতেহারের মাধ্যমে উপজেলাবাসীকে জানান দেন যে, তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে সেরা ও সময়োপযোগী প্রার্থী। জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি সবার আগে নকলাকে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।
তাঁর লিখিত ইশতেহারে উল্লিখিত একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিকল্পনা সমূহ হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘আমি প্রথমেই বলবো, নকলা উপজেলাকে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে ও মডেল উপজেলা হিসেবে পরিচিতি পেতে যা যা করার দরকার সবাইকে সাথে নিয়ে তাই করবো ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ করে-শিক্ষার মানোন্নয়নে উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে স্থানীয় সকল নিয়োগের ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবো। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে সচেষ্ট থাকবো। কারণ কোনো এলাকার শিক্ষার উন্নয়নের উপরেই ওই এলাকার সার্বিক উন্নয়ন নির্ভর করে।
ভাষা শহিদ ও মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিকদের সম্মানে উপজেলায় কেন্দ্রীয় ভাবে স্থায়ী পূর্ণাঙ্গ শহিদ মিনার ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবো।
সুস্থতাই সকল সুখের মূল। এ বিবেচনায় স্বাস্থ্য সেবা ও চিকিৎসা দান ব্যবস্থায় জনগণের চহিদা মোতাবেক গুরুত্ব বৃদ্ধিতে সকলের পরামর্শ নিয়ে কাজ করব।
আজকের তরুণরাই আগামী দিনের কাণ্ডারি। তারাই সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করে দেশকে নেতৃত্ব দিবে। তাদের হাত ধরেই দেশ জাতি সামনের দিকে এগিয়ে চলবে। আমরা হবো গর্বিত বাঙালি। তাই তরুণদের মাদক ও জুয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ থেকে রক্ষা করতে নকলাতে মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নিশ্চিত করা হবে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সাধারণ শিক্ষার সাথে অতোপ্রতো ভাবে জড়িত। তাই ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য সতন্ত্র একাডেমি স্থাপন করা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যায়ামাগার বা জিমনেসিয়াম স্থাপন করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট থাকবো।
নকলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা হলেও গোপনে গোপনে বাল্যবিবাহ হচ্ছে বা হয় বলে জানা যায়। তাই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা ও যৌতুক প্রথা বন্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া ইভটিজিং বন্ধে আপোষহীন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।
জনসম্পদ আগুনে পোড়া থেকে রক্ষা করতে নতুন করে ফায়ার সার্ভিস ভবন নির্মাণে বা পুরাতন ভবনকে সংস্কার করে ফায়ার সার্ভিস চালু করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবো।
উপজেলার উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়া ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় সমূহে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে থকবো আপোষহীন। আমি যেহেতু দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত নই, সেহেতু কোনো প্রকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
সর্বোপরি মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, শিক্ষা, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থান) সমূহের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা হবে। মৌলিক চাহিদা পূরণ সংক্রান্ত কোন কারণে যেন সরকারের বিন্দুমাত্র সুনাম ক্ষুণ্ন না হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
এছাড়া পরিবহণ সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে পরিবহণ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এবং জনস্বার্থে প্রাপ্যতা অনুযায়ী কৃষি সেবা, সমাজসেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, বিদ্যুৎ সেবা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ দেশ ও জাতির কল্যাণে যখন যেখানে যা যা করা দরকার বলে মনে হবে, সবকিছু সঠিক ভাবে বাস্তবায়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে আমি বদ্ধ পরিকর।
আপনারা সবাই জানেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের সবার প্রিয় নকলাকে সবার আগে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে আমি সচেষ্ট থাকবো।
তাই সার্বিক উন্নয়নসহ স্মার্ট নকলা গড়ার প্রত্যয়ে আমাকে দোয়াত কলম প্রতীকে ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন। আপনারা এর আগে আমাকে স্বল্প সময়ের জন্য আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। তখন আমার কাজের স্বীকৃত স্বরূপ জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত হয়েছিলাম। এই প্রাপ্তি আপনাদের। আশাকরি আমার সততা ও উন্নয়নমূলক কাজের বিবেচনায় আগামী ২১ মে মঙ্গলবার আপনাদের পবিত্র ভোট খানা দোয়াত-কলম প্রতীক দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন, ইনশাআল্লাহ।