
ছবি সংগৃহীত: শিক্ষার্থী শারদুল আশিস (সৌরভ)।
স্টাফ রিপোর্টার।।
শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে শিক্ষার্থী শারদুল আশিস (২২) নিহতের ঘটনায় সাবেক হুইপ ও দুই সংসদ সদস্যসহ ৮৭ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩০০-৪০০ জনকে।
নিহত শারদুলের পিতা ছোহরাব হোসেন বাদী হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেরপুর সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিউর রহমান, শেরপুর-১ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানুয়ার হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমানসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত শারদুল আশিস (সৌরভ) ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জড়াকুড়া গ্রামের ছোহরাব হোসেনের ছেলে। তিনি শেরপুর শহরের ডা. সেকান্দর আলী কলেজের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট প্রশাসনের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে তিনি মারা যান।
মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন, শেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া, ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, নকলা পৌরসভার সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন, নালিতাবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, নকলা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এড. মাহবুবুল আলম সোহাগ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুন্নাহার কামাল, সদরের চরপক্ষীমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আকবর, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন সালেম, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আলিম, আনোয়ারুল হাসান উৎপল, কানু চন্দ্র চন্দ, দেবাশিস ভট্টাচার্য, মানিক দত্ত, মাহবুবুর রহমান সোজা, নালিতাবাড়ীর গোপাল সরকার, নন্নী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল চৌধুরী, ডাঃ আব্দুল বারেক তোতা, ডাঃ এ টি এম মামুন জুস, জেলা যুবলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোজাহিদুল ইসলাম সোহাগ, জেলা জাসদের সভাপতি মনিরুল ইসলাম, সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ও গাড়িচালক হারুন মিয়া।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৪ আগস্ট বিকেলে শেরপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মিছিলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দেন ও গুলি ছোড়েন। এসময় কলেজ থেকে বড়ি ফিরছেন শারদুল আশিস (সৌরভ)। এক পর্যায়ে তিনি (শারদুল আশিস) শহরের খরমপুর এলাকায় প্রশাসনের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান। পরে তাঁর লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়। একই দিনে প্রশাসনের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে আরেক কলেজছাত্র ‘মাহবুব আলম’ নিহত হয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদী ছোহরাব হোসেন এ ঘটনার জন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলার কোনো আসামি এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি।