নিজস্ব প্রতিবেদক।।
শেরপুরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের ত্রীমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে। প্রায় ৪ ঘন্টাব্যাপী বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আন্দোলনকারী, কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী ও অন্তত ১০ জন পুলিশ আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম নামে পুলিশের এক নায়েককে গুরুতর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে নেয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। তিনি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করার সময় হঠাৎ তার হাতেই তা বিস্ফোরিত হলে তার হাতের কব্জি পর্যন্ত ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শেরপুর সদর হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
জানা যায়, চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা শেরপুর সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে জড়ো হতে থাকে। এসময় কলেজ গেটে ছাত্রলীগের কর্মীরা অবস্থান নিলেও পরে তারা সরে যায়। দুপুর ৩ টায় কোটা বিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরে বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে থানামোড়ে গিয়ে বিক্ষোভ করে।
এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ তাদের উপর হামলা করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে নারী শিক্ষার্থী সহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সরব উপস্থিতির মুখে এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে। এসময় পুলিশ উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করতে চেষ্টা করেন। এসময় তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ একজন কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীকে আটক করলে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠে। এসময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়ায় শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হতে থাকে এবং কিছু সাধারণ মানুষকেও তাদের সাথে যোগ দিতে দেখা যায়। ফলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এসময় নিউমার্কেট মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে আন্দোলনরতরা টিয়ার গ্যাসের ঝাঁঝ থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালায়।
শহরে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সন্ধ্যার পর থেকেই লোক চলাচল কমে গেছে।
এ ব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হোসেন পিপিএম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আন্দোলনকারীদের হামলায় আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা খুবই গুরুতর। থানায় নিয়মিত মামলার প্রক্রিয়া চলছে।”