নিউজ ডেস্ক।।
শেরপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে এনামুল হক নামের এক সাংবাদিকের মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ উঠেছে শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মিজান ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের বিরুদ্ধে।
গত ৮ জুলাই সোমবার সকালে সদর উপজেলার শিমুলতলী বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে । এ নিয়ে ১০জুলাই বুধবার রাতে সদর থানায় মামলা হয়েছে। আহত সাংবাদিক এনামুল হক ‘দৈনিক বাংলার নবকন্ঠ’ পত্রিকার শেরপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন।
এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান মিজান এখনো সাংবাদিকে এনামুলকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ। তার ফেসবুক আইডিতে এনামুলের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াতেও দেখা গেছে।
ভাইস চেয়ারম্যান মিজান অত্যন্ত প্রভাবশালী। তার হুমকির মুখে সাংবাদিক এনামুল বাড়ি ছেড়ে জেলা শহরে তার বড়ো ভাইয়ের বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়।
জানা যায়, গত ৮ জুলাই সোমবার সকালে বাড়ি থেকে পার্শবর্তী জামালপুরে যাচ্ছিলেন এনামুল। এসময় পথিমধ্যে শিমুলতলী বাজারে পৌঁছালে সেখানে ভাইস চেয়ারম্যান মিজান তার লোকজন নিয়ে সাংবাদিক এনামুলের উপর হামলা চালায়। এসময় মিজান তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে আঘাত করলে সাংবাদিক এনামুলের কপাল কেটে যায়। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ব্যাপারে এনামুল বাদি হয়ে শেরপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সাংবাদিক এনামুল বলেন, “পূর্ব থেকেই আশফুল আলম মিজানের সাথে আমার বিরোধ চলছিলো। সামনেই সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে চলাফেরা করায় সে আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়। ইতিপূর্বেও আমাকে দুইটি মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে সে। তার (মিজান) নারী কেলেঙ্কারির একাধিক ঘটনা রয়েছে। সেসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় আমাকে দায়ী করতো। এ সকল ঘটনার জের ধরেই এই হামলা করা হরেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।”
এ ব্যাপারে চরপক্ষিমারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম রাব্বানী মন্টু বলেন, “আসলে পূর্ব শত্রুতার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে আগে তারা দুইজন ঘনিষ্ট বন্ধু ছিল। একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও দিনদুপুরে লোকজন নিয়ে এসে একজন সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনাটি অত্যন্ত নেক্কারজনক।”
এদিকে বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয় উল্ল্যেখ করে শেরপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. মারুফুর রহমান মারুফ বলেন, “খবর প্রকাশের জেরে সবাই সাংবাদিদের উপর রাগ পুষে রাখেন। সময় সুযোগ পেলেই সেটা কাজে লাগান। সাংবাদিক এনামুলের ক্ষত্রেও তাই হয়েছে। প্রতিনিয়তই আমরা এমন সমস্যায় পড়ছি। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনাটি মানা কষ্টের। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
এ ব্যাপারে শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি দেবাশীষ ভট্রাচার্য্য বলেন, “একজন জনপ্রতিনিধি কর্তৃক সাংবাদিকের উপর হামলা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত হলেই সাংবাদিকরা এর বিচার পাবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এর বিচার দাবি করছি।”
তবে অভিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যান মিজান মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সব মিথ্যা। আমি এর সাথে জড়িত নই।”
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক বলেন, সাংবাদিক এনামুল হকের উপর হামলার ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।