ছবি: ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর বাঁধে ভাঙন
মো: নমশের আলম।।
শেরপুরে পাহাড়ী ঢল, বাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৩০গ্রামের মানুষ। গত কয়েক দিন থেকে হচ্ছে অবিরাম বর্ষণ। এতে জেলার উত্তর সীমান্তের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর পানি বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার ভোরে রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, দিঘিরপাড়, ঝিনাইগাতীসহ কয়েক স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে অন্তত ৩০টি গ্রাম পানিবন্ধি হয়ে পরেছে।
ঢলের পানি প্রবেশ করেছে উপজেলা শহরের প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন অফিস ও বাড়ী ঘরে। এতে বিপাকে পরেছে সাধারণ মানুষ।ঝিনাইগাতীর সোমেশ্বরী এবং সদর উপজেলার মৃগী নদী, দশানি নদী ও পুরাতন ব্রক্ষপুত্র নদের পানিও বেড়েছে। তবে এসব নদীতে পানি বিপদসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে।
নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালী নদীর পানি গতকাল বিপদসীমার ২৪৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ তা আরো বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও ভোগাই নদী খালভাঙ্গা এলাকায় পাড় ভেঙ্গে গেছে । এতে সড়ক তলিয়ে গিয়ে শেরপুর-গাজিরখামার নালিতাবাড়ী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অপরদিকে শ্রীবরদীর সোমেশ্বরী নদীতেও ব্যাপক ভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেই সাথে পানিতে ডুবে গেছে অনেক পুকুর, সবজি ক্ষেত ও বীজতলা।
স্থানীয়রা জানান, মহারশি নদীর ঝিনাইগাতী ব্রীজপাড় এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় অবৈধ দখলদাররা বসতি স্থাপন করেছে । ফলে নদীর নাব্যতা কমে গেছে। নদীটি খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে না আনায় প্রতিবছর ঝিনাইগাতী বাজারসহ সংলগ্ন এলাকা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সচেতন মহলের দাবী এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হোক। নদী খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে দেয়াসহ স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হউক।
এদিকে ইউএনও মো. আশরাফুল কবীর রাসেল, সহকারি কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রানী ভৌমিক, উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাদৎ হোসেন, ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
ঝিনাইগাতীর ইউএনও জানান, মহারশি নদীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। স্ব-স্ব- ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পানি বন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক অনুদান ও ঢেউটিন প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।