স্টাফ রিপোর্টার।।
শেরপুরে ঝিনাইগাতীতে ধানশাইল ইউনিয়নের দক্ষিন কান্দুলী গ্রামে পাশের বিলে বন্যার পানিতে নৌকা নিয়ে বেড়াতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে
মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় আহত আরো ৬ জন চিকিৎসাধীন আছেন।
২১ জুন শুক্রবার দুপুরে তারা দুদিন আগের পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে নৌকায় করে বাড়ির পাশের বাইসা বিলে বেড়াতে গেলে হঠাৎ তাদের নৌকাটি ডুবে যায়। জানা যায় হতাহতরা কেউই ভালো সাঁতার জানতেন না।
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন, দক্ষিণ কান্দুলী গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোরহাব আলীর ছেলে মো. মোশারফ হোসেন মিল্টন (২১) ও পাশের বাড়ির মো. আবু সাইদ সাদা মিয়ার ছেলে আমানুল্লাহ আমান (২১)। নিহত মিল্টন রংপুর মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও আমানুল্লাহ আমান তিনানি আদর্শ সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
আহতরা হলেন, জাহাঙ্গীর আলম, তরিকুল ইসলাম, রবিন মিয়া, শরিফুল ইসলাম, সোহেল মিয়া ও
হামিদুর রহমান। তারা সকলেই পরস্পরের বন্ধুবান্ধব ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
এই ঘটনার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। জানা যায়, মোশারফ হোসেন মিল্টনরা দুই ভাই ও এক বোন। বড়ভাই মোদী দোকানদার আর পিতা একজন গরীব কৃষক। এবিষয়ে মিল্টনের বাবা মো. সোরহাব আলী বলেন, ছেলেকে নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন যখন পুরন হতে যাচ্ছিল, তখনই এ দূর্ঘটনায় তার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।
এ ঘটনায় শেরপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এডিএম শহিদুল ইসলাম ও ঝিনাইগাতী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. খন্দকার রাহাত মাহফুজ। তিনি বলেন, আমরা দুই জনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। আহত অবস্থায় আসা অপর দুইজনের চিকিৎসা চলছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে গজারমারি বিলে ও সংলগ্ন বাইসা বিলে বন্যার পানিতে দুইটি নৌকা নিয়ে ঘুরতে যায় ৮ বন্ধু। কিন্তু হঠাৎ তাদের একটি নৌকা ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া নৌকার সবাই হুড়োহুড়ি করে অপর নৌকায় নৌকায় উঠতে গেলে দ্বিতীয় নৌকাটিও ডুবে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দুইজন মুমুর্ষ অবস্থায় শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকিরা স্থানীয় প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঝিনাইগাতী সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, বাড়ির পাশের বিলে নৌকায় ভ্রমণ করতে দিয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের প্রস্তুতি চলছে।