দৈনিক শেরপুর ডেস্ক :
রাস্তায় পড়ে থাকা অসুস্থ বৃদ্ধার স্বজনদের খোঁজ মিলেছে অবশেষে। ওই বৃদ্ধার নাম হাওয়া খাতুন (৯০), স্বামীর নাম আজিজুল। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলা শহরের কৃষ্ণপুর প্রাইমারি স্কুলের পাশে।
বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা সংগঠন রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে তারা খবর পান যে শহরের জেলখানা মোড়ে রাস্তার পাশে প্রায় ৯০ বছর বয়সের এক বৃদ্ধা অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছে। খবর পেয়ে রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর সদস্যরা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে প্রথমে শেরপুর ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এ সময় বৃদ্ধা অসুস্থতা বেশি থাকায় পরিষ্কারভাবে তার নাম ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। তবে বৃদ্ধার ইশারা-ইঙ্গিতে রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর সদস্যরা বুঝতে পারেন যে, অসুস্থতার কারণে তার ছেলে-মেয়েরা হয়ত এখানে তাকে ফেলে রেখে গেছে। পরবর্তীতে তার পরিচয় জানাতে সহযোগিতা চেয়ে রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর ফেইসবুক গ্রুপে বৃদ্ধার ভিডিও সহ পোস্ট করা হয়। এরপরই ওই বৃদ্ধার পরিচয় জানা যায়।
প্রথমে ওই বৃদ্ধার নাতি পরিচয়দানকারী একজন ফোন করে বৃদ্ধাকে তাদের পরিবারে ফিরিয়ে নেয়ার কথা বলেন। এদিকে রক্তে সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মাদার তেরেসা খ্যাত সমাজসেবক রাজিয়া সামাদ ডালিয়া এবং শেরপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শেখ জাবের আহমেদ বিষয়টি অবগত হয়ে ময়মনসিংহের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং আত্মীয় পরিচয় দানকারীদের শনাক্ত করেন।
এরই সূত্র ধরে আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে বৃদ্ধার মেয়ের ঘরের দুই নাতি নাছির ও আরজু বেগম বৃদ্ধাকে তার পরিবারে ফিরিয়ে নিতে শেরপুর আসেন। সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ, রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান সমাজসেবক রাজিয়া সামাদ ডালিয়া এবং রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আলামিন রাজুসহ অন্যান্য সদস্য এবং শেরপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল ও অন্যান্য সংবাদকর্মী ওই বৃদ্ধাকে তাদের হাতে তুলে দেন।
জানা যায় যে, বৃদ্ধা হওয়া খাতুন এর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে দু’জন ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করেন। ওই বৃদ্ধা ৪ জানুয়ারি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর তারা স্থানীয়ভাবে মাইকিং এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেই সাথে তারা তাদের মাকে খোঁজাখুঁজি করেন। এরই একপর্যায়ে ফেইসবুকে রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর গ্রুপে তার মার ভিডিও প্রতিবেদন দেখে শেরপুরে রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর সাথে যোগাযোগ করেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ বলেন, ‘ওই বৃদ্ধার বিষয়ে খবর পেয়ে আমি আজ সকালে স্থানীয় একটি বৃদ্ধাশ্রমে খোঁজখবর নিতে থাকি তাকে বৃদ্ধাশ্রমে দেওয়া যায় কী না। এমতাবস্থায় আজ সকালেই একটি আননোন নাম্বার থেকে আমার মোবাইলে ফোন আসে এবং ওই বৃদ্ধার পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়ে তাদের পরিবারে ফিরিয়ে নিতে চায়। পরবর্তীতে আমি বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে ওই বৃদ্ধাকে তার পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেই।’