ইসরাইল-লেবানন সর্বাত্মক যুদ্ধ কি হবেই

 

ডেস্ক রিপোর্ট।।

 

হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের উত্তেজনা এখন চরমে। এবারে ইরানের সরাসরি হুমকিতে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তাপ আরো বেড়েছে।শনিবার (২৯ জুন) ইসরায়েলকে উদ্দেশ্য করে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। ইরান বলেছে, ইসরায়েল লেবাননে আক্রমণ করলে ইরান ও তার আঞ্চলিক মিত্রদের গ্রুপ ‘অল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টস’ ইসরায়েল সঙ্গে লড়াইয়ে নামবে।

ইরানের এই হুমকির পর দৃশ্যপট বদলে যাচ্ছে। এখন এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে যুদ্ধ বেঁধে গেলে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে একটি বড় ধরণের সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে। বিশ্ব রাজনীতিতেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।

ইরান ও তুরস্কের ভূমিকা কি হবে তা তারা স্পষ্ট করেছে। আমেরিকা ও তার পশ্চিমা মিত্ররা কি করবে। দু’পক্ষের সর্বাত্মক যুদ্ধের পরিণতিই বা কি হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আন্তর্জাতিক নানা সংবাদ মাধ্যমের খবরাখবর থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন।

গাজা যুদ্ধে ইসরাইল ব্যর্থ 

হামাসকে নির্মূলের ঘোষণা নিয়ে গাঁজা যুদ্ধ শুরুর পর আট মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু লক্ষ্য বাস্তবায়নের ধারে কাছেও যেতে পারেনি তারা। নির্মূল তো দূরের কথা, হামাসের টিকিটিও ছুঁতে পারেনি ইসরাইল। তবে ৪০ হাজারেরও অধিক নিরিহ নারী শিশু ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে তারা। এ নিয়ে সরা বিশ্বে আজ তারা নিন্দিত ও ঘৃণিত। খোদ আমেরিকায় নজিরবিহীন ও অবিশ্বাস্য ছাত্র বিক্ষোভ বিশ্ববাসীকে স্তম্ভিত করেছে।

এ বিষয়ে খোদ ইসরাইলের সামরিক মুখপাত্র নিজেই বলেছেন, হামাসকে নির্মূল করা সম্ভব নয়। হামাসকে নির্মূলের কথা বলা মানে জনগণকে ধোঁকা দেয়া। হামাস একটি আদর্শ আর এর শেকড় জনগণের হৃদয়ে গাঁথা। আর কোন আদর্শকে নির্মূল করা যায় না।

গাঁজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে বহু মূল্য দিতে হয়েছে। হতাহত সৈন্য সংখ্যা, ধ্বংসপ্রাপ্ত সামরিক সরঞ্জাম, সৈন্যদের ক্লান্তি সবমিলিয়ে ইসরাইলি বাহিনী নাস্তানাবুদ। এই পরিস্থিতিতে ইসরাইলের ভেতরেও অসন্তোষ বাড়ছে‌। নেতানিয়াহুর পরিবার থেকে প্রকাশ্যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সেনা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র চলছে বলে।

ইসরাইল হিজবুল্লাহ উত্তেজনা 

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় ধ্বংসলীলা প্রায় শেষ, এরপর লেবাননকে ধুলোয় মেশানো হবে। এর জবাবে হিজবুল্লাহ প্রধান ইসরাইলকে মানচিত্র থেকেই মুছে দেয়ার পাল্টা হুমকি দিয়েছেন। পাল্টাপাল্টি এই হুমকিতে মধ্যপ্রাচ্য যতটা উত্তপ্ত, ততটাই উদ্বিগ্ন বিশ্ববাসী। এটা সবাই জানে যে, যুদ্ধ শুরু হলে তা শুধু দু’পক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।

সর্বাত্মক যুদ্ধের পরিণতি কি হবে 

লেবানন-ইসরাইল সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি কি হবে? এ নিয়ে একটি বিশ্লেষনধর্মী লেখা লিখেছেন আরব বিশ্বের প্রখ্যাত রাজনৈতিক ভাষ্যকার আব্দুল বারি আতওয়ান। লিখছেন আমেরিকা ইউরোপ ও ইসরাইলি বিশ্লেষকরাও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ শুরু হলে ইসরাইলকে বড় শক্তি ইরানের মুখোমুখি হতেই হবে। সিরিয়ায় ইরানি কনসুলেটে হামলার জবাবে ইরানের পাল্টা হামলায় চোখ কপালে উঠে গেছে ইসরাইলি সমরবিদদের।

আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি সহ পশ্চিমা জোট এবং তাদের মিত্র জর্ডান, সৌদি আরব, আমিরাত মিলে সবরকম প্রস্তুতি নিয়েও সেই পূর্বঘোষিত হামলা ঠেকাতে পারেনি। ফলে সব লজ্জা সংবরণ করে চুপচাপ মেনে নিতে হয়েছে ইসরায়েলকে। তারা নিজেদের দুর্বলতা আর ইরানের সক্ষমতা বুঝে গেছে। ইসরাইলিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন দেশে ইরানের প্রক্সি বাহিনীগুলোর সামরিক সক্ষমতাও যথেষ্ট বেড়েছে। এদের মধ্যে হিজবুল্লাহর শক্তি হামাসের চেয়ে শতগুণ বেশি। তাদের আছে উচ্চ প্রশিক্ষিত নিজস্ব স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী। নিজস্ব সৈন্য সংখ্যাও লাখের কাছাকাছি।

হিজবুল্লাহ কতটা শক্তিশালী 

গত বছরের ৭ অক্টোবরে ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামাসের অভাবনীয় হামলার জবাবে গাজা যুদ্ধ শুরু করে ইসরাইল। হামাসের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে মাঝেমধ্যেই ইসরাইলে হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। এসব হামলাও পুরোপুরি ঠেকাতে পারেনি ইসরাইল।

সম্প্রতি ইসরাইলের নতুন আতঙ্ক হিজবুল্লাহর ‘হুদহুদ’ ড্রোন। উত্তর ইসরাইলে হিজবুল্লাহ এই গোয়েন্দা ড্রোন পাঠানোর পর, ইসরাইলি কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

হুদহুদ ড্রোন ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে হাইফার বিমান ও নৌঘাঁটিসহ স্পর্শকাতর সব ছবি ও ভিডিও ধারণ করে লেবাননে ফিরে গেছে। হিজবুল্লাহর প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে তা পরিষ্কার দেখা গেছে।

হিজবুল্লাহর হাতে রয়েছে লাক্ষাধীক ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট ও ড্রোন। ইসরাইলি সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব সমরাস্ত্রের মোকাবিলায় ইসরাইল সব দিক দিয়ে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে।

ইসরাইলি সমরবিদরা কি বলছেন 

হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধকে ‘সম্মিলিত আত্মহত্যা’ বলে নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন ইসরাইলের সাবেক জেনারেল ইজহাক ব্রিক। ইরনা সূত্রে গত বুধবার ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা সামা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইজহাক ব্রিক বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হিজবুল্লাহ কী করছে সেদিকে নজর দিতে দিন। ইসরাইলের হাজার হাজার একর দগ্ধ ভূমিতে বসতিগুলো ভেঙে পড়েছে এবং বিরান পড়ে আছে’।

ব্রিক বলেছেন, ‘গাজায় যে দৃশ্যগুলো সচারচর দেখা যায়, ইসরাইলের অধীকৃত উত্তর অংশেও তাই দেখা যাচ্ছে।

গত কয়েক মাস ধরে চলা হিজবুল্লাহর ড্রোন, রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ করতে দেশটির আয়রন ডোম কার্যত ব্যর্থ হয়েছে’।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র বা পরবর্তী যুদ্ধে হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি না’।

ব্রিক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘যখন একটি যুদ্ধক্ষেত্রে ইসরাইলের কোনো সেনাবাহিনীই নেই, তখন তারা কীভাবে ছয়টি মোকাবিলা করবে? তারা হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্রের মোকাবিলা কিভাবে করবে?’

উত্তেজনা ডালপালা ছড়াচ্ছে 

ইতিমধ্যে উত্তেজনার ডালপালা আরো ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। ইরান আগেই বলেছে, হিজবুল্লাহ নিজেকে এবং লেবাননকে রক্ষা করতে সক্ষম। এখন তো ইরান তার পুরো অক্ষশক্তি নিয়ে যুদ্ধে নামার হুমকি দিয়ে বসেছে। দখলদার ইসরাইলের যেকোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত তাদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলে ইসরাইলজুড়ে রকেট ও ড্রোন হামলা চালানো হবে। এরিমধ্যে, ইসরাইলের স্পর্শকাতর লক্ষ্যবস্তুর ফুটেজ প্রকাশ করেছে হিজবুল্লাহ‌। সেই ভিডিও নিয়ে চিন্তিত আমেরিকারও।

হুদহুদ ড্রোনের হামলা চালানোর শক্তিও থাকার কথা। ইসরাইল গত ১০ বছর ধরে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র শক্তির ওপর গভীর নজর রেখে আসলেও হুদহুদ ড্রোনের সক্ষমতা দেখে তারা হকচকিয়ে গেছেন। তারা বুঝতে পেরেছে, হুদহুদ দ্রুতগতির এবং রাডার ব্যবস্থা ফাঁকি দিতে পারে।

ইউরোপেও উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে 

হিজবুল্লাহ প্রধান সাইপ্রাসেও হামলার হুমকি দিয়েছেন। এ নিয়ে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডৌলিডিস কথা বলেছেন। তিনি ঘাবড়ে গিয়ে বলেছেন, লেবাননের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা সাইপ্রাসের নেই। ইসরাইলকে তাদের আকাশসীমা কোনভাবেই ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।

এদিকে হিজবুল্লাহর হুমকির বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কারন সাইপ্রাস ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র। তবে সাইপ্রাস ন্যাটো সদস্য নয়।

এদিকে ন্যাটো সদস্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে লেবাননের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তুরস্ক লেবাননের পাশে থাকবে। বুধবার (২৬ জুন) তুর্কি সংসদে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। খবর আনাদোলুর।

তাহলে পরিস্থিতি কি দাঁড়াচ্ছে 

আত্মিক মনোবল ও সামরিক শক্তির দিক দিয়ে হিজবুল্লাহ এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। তাই সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি লেবানন সফরে গিয়ে খালি হাতে ওয়াশিংটনে ফিরে গেছেন। হিজবুল্লাহকে টলাতে পারেনি তাদের অবস্থান থেকে।

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইয়েমেন হুথিরা লোহিত সাগরে ইসরাইলি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল বাণিজ্যিক জাহাজে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে। ২৫০০ কিলোমিটার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তারা ইসরাইলের ভেতরেও হামলা চালিয়েছে। তাদের হতে আছে নিজেদের তৈরি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। লেবাননে হামলা হলে হুথিদের ক্ষেপনাস্ত্রো ইসরাইলে ঝাঁপিয়ে পড়বে।

আমেরিকার নেতৃত্বে বহুজাতিক জোট ইয়েমেনে অনেকবার হামলা করেও লোহিত সাগরে হুথিদের হামলা বন্ধ করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত হুথিরা আমেরিকার বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস থিওডর রুজভেল্টের উপর ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি আইজেনহাওয়ারকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার খবর দেয়ার পরপরই ওই রণতরীকে প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেয়া হয়।

হুথিরা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে আরো একটি বৃহৎ জাহাজ ডুবিয়ে দেয়ার ভিডিও প্রকাশ করেছে। হুথিদের হামলা ঠেকাতে না পারায় এই সমুদ্রপথে বাণিজ্য সীমিত হয়ে গেছে। তারা হামলার পরিধি ভারত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত করতে পারে। হুথিদের শক্তি সামর্থ্য আর মনোবলের কথা কারো অজানা নয়। পাশাপাশি ইরান যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয় তবে আমেরিকার সমুদ্র বাণিজ্য বলতে গেলে বন্ধ হয়ে যাবে। জ্বালানী তেলের বাজার অগ্নিমূর্তি ধারণ করবে। সেইসাথে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আমেরিকার বিভিন্ন ঘটি ও যুদ্ধজাহাজেও হামলা হতে পারে।

যুদ্ধ আটকাতে চায় আমেরিকা 

এই পরিস্থিতিতে মার্কিন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ প্রধান ইউএস এয়ারফোর্স জেনারেল চার্লস কিউ. ব্রাউন গত সোমবার সতর্ক করে বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে ইসরাইলকে রক্ষা করবে না। সম্ভবত এক্ষেত্রে তারা অক্ষম। যেভাবে তারা গত এপ্রিলে ইরানের ড্রোন হামলার সময় পদক্ষেপ নিয়েছিল’।

ব্রাউন আরো বলেন, ‘ইরান তখন হিজবুল্লাহকে সমর্থন করতে আরো বেশি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে’।

ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদন মতে, সোমবার (২৪ জুন) এক সাক্ষাৎকারে ব্রাউন সতর্ক করে বলেন, ‘চলতি বছরের এপ্রিলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা থেকে ইসরাইলকে বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে এগিয়ে গিয়েছিল, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধে সেভাবে সহায়তা নাও করতে পারে। হিজবুল্লাহ স্বল্পপাল্লার যেসব রকেট দিয়ে ইসরাইলে হামলা করছে সেগুলো প্রতিহত করা কঠিন’।

ব্রাউন বলেছেন, ‘যুদ্ধ শুরু হলে হিজবুল্লাহকে সহযোগিতায় আরও এগিয়ে আসবে ইরান‌। বিশেষ করে তারা যদি মনে করে হিজবুল্লাহ বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে’।

ব্রাউন আরও বলেছেন, ‘লেবাননে ইসরাইলের সামরিক অভিযানের ফলে বৃহত্তর সংঘাতের ঝুঁকি বাড়বে। যা মার্কিন বাহিনীকে বিপদে ফেলবে’।

ব্রাউন বলেছেন, ‘মার্কিন সেনাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার। ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্যপ্রাচ্যে কোনো মার্কিন ঘাঁটি হামলার শিকার হয়নি’। তিনি আরও বলেন, ‘লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার বিরুদ্ধে ইসরাইলকে সতর্ক করা অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র’।

এদিকে হিজবুল্লাহ নেতা নাসরাল্লাহ গত বুধবার এক বক্তৃতায় বলেন, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন ও অন্যান্য দেশের সমমনা নেতারা হিজবুল্লাহকে সহায়তা করার জন্য হাজার হাজার যোদ্ধা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন।

নাসরাল্লাহ বলেন, ‘আমরা তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমাদের কাছে যে এক লাখ যোদ্ধা রয়েছেন, তাতেই আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করছি’।

এর আগে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সর্বশেষ যুদ্ধ হয়েছে ২০০৬ সালে। সেই যুদ্ধে ইসরায়েলকে নাস্তানাবুদ করেছিল হিজবুল্লাহ। এবার গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে তেল আবিব।

কিন্তু ইসরাইলের শত্রুরা এখন আর দুর্নীতিগ্রস্ত ও বিলাসী অযোগ্য আরব শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং হিজবুল্লাহ থেকে শুরু করে হামাস, ইসলামিক জিহাদ, হুথি, ইরাক ও সিরিয়ার মিলিশিয়া বাহিনী ছাড়াও অ-রাষ্ট্রীয় অনেক শত্রুর জন্ম হয়েছে।

সম্প্রতি ইরান সমর্থিত ইরাকি মিলিশিয়া বাহিনী আসাইব আহল আল-হকের নেতা কায়েস আল-খাজালি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি লেবাননে ইসরাইলি হামলা সমর্থন করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের জানা উচিত যে, এ অঞ্চলে বিশেষ করে ইরাকে সে তার সব স্বার্থ ঝুঁকির মুখে ফেলবে।

সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণে করে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল সত্যিই সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করলে সুবিধা করতে পারবেনা। ইসরাইল বিপদে পড়লে আমেরিকা চুপ থাকবে না। আর আমেরিকা পা বাড়ালেই রাশিয়া ও চীন নিশ্চিতভাবেই হিজবুল্লাহকে বাইরে থেকে সমর্থন দেবে।

এতে যুদ্ধ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে এবং বিশ্ব বিভক্ত হয়ে পড়বে। ফলে অস্ত্র আর অর্থ দিয়ে সাহায্য করলেও লড়াইটা হয়ত ইসরায়েলকে একাই করতে হবে। আর একা লড়াই করে টিকে থাকা তাদের পক্ষে সহজ হবেনা। পরিস্থিতি ভালভাবেই বুঝতে পারছে ইসরাইল। তাই তারাও এখন কুটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজছে।

এই ক্যাটাগরি থেকে আরো দেখুন...

শেরপুরে চালকলের মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

  নিউজ ডেস্ক : শেরপুরে চালকলের মাঠে ক্রিকেট খেলতে নিষেধ করায় কয়েকজন তরুণ মিলে ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মো. হাবিবুর রহমান তালুকদার ওরফে…

বিস্তারিত পড়ুন...

মসজিদ-মাদরাসায় আশ্রয় দেয়া হয় বিপদে পড়া হিন্দুদের : মানবিক দৃষ্টান্ত মুসলিমদের 

ছবি সংগৃহীত আন্তর্জাতিক ডেস্ক :   ভারতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় উৎসব হলো কুম্ভমেলায় গত ২৯ জানুয়ারি পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার বিপন্ন হয়ে পড়ে হাজারো পুণ্যার্থীরা।উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের (ইলাহাবাদ)…

বিস্তারিত পড়ুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

খেলার খবর

শেরপুরে মাদকবিরোধী প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত 

শেরপুরে মাদকবিরোধী প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত 

শেরপুরে অনুর্ধ-১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন   

শেরপুরে অনুর্ধ-১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন   

নকলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সন্তানদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

নকলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সন্তানদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

শেরপুরে ফুটবল খেলোয়াড় বাছাই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত  

শেরপুরে ফুটবল খেলোয়াড় বাছাই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত  

শেরপুরে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান

শেরপুরে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান

শেরপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

শেরপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত