ছবি : নিহত মোতালেব এর বাড়ীর দৃশ্য।
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন শেরপুরের একই পরিবারের ৪ জন সদস্য। তারা হলেন আব্দুল মোতালেব (৩৬), তার স্ত্রী সাবিনা আক্তার (৩০), ছেলে সোয়াইব (৪) ও মেয়ে মুক্তা (৯)। নিহতরা শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আব্দুল মোতালেব (৩৬) ঢাকা সেনানিবাসে বেসরকারি কর্মচারী হিসেবে চাকরি করতেন। আর পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকতেন।
জানা যায়, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ শেষে বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকায় ফিরছিলেন তাঁরা। রাত পৌনে দুইটার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার নুরানি গেট এলাকায় তাদের বহনকারী প্রাইভেট কারটি খালে পড়ে যায়। এতে দুই পরিবারের শিশু সদস্যসহ আটজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে মোতালেবসহ তাঁর পরিবারের চারজন ছিল।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ভোরে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আব্দুল মোতালেব ও তার স্ত্রী এবং ছেলে ও মেয়ের মৃত্যুর খবর পৌঁছালে মোতালেবের গ্রামের বাড়ি রঘুনাথপুরে শোকের ছায়া নেমে আসে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিহতের পরিবারে চলছিল শোকের মাতম। পুত্র, পুত্রবধূ আর নাতি নাতনিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন মোতালেবের বাবা নাজিম উদ্দিন। এসময় উচ্চস্বরে আহাজারি করছিলেন মোতালেবের মা ময়না বেগম, বড় বোন লাভলী সহ অন্য আত্মীয়স্বজন। দুর্ঘটনার খবর শুনে মোতালেবের বাড়িতে ভিড় করেন প্রতিবেশী ও স্বজনেরা।
বুক চাপড়িয়ে মা ময়না বেগম বলছিলেন, ‘অহন আমগরে দেখবো কে? কেমনে আমগরে সংসার চলব? অসুস্থ মাইয়ার চিকিৎসার জন্য ওষুধ কিইনা দিব কেরা?’
মোতালেবের বাবা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘জানি না আল্লাহ আমারে কেন এমন শাস্তি দিল। আমার পুরা সংসারটা ভাইঙ্গা গেল।’
জানা যায়, নাজিম উদ্দিন-ময়না বেগম দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে মোতালেব ছিল ছোট। তাঁদের মেয় লাভলী শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন বলে বাবার বাড়িতেই থাকেন। মোতালেবের একক উপার্জনেই চলত এই পুরো পরিবারটি।
কামারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. ইন্তাজ আলী বলেন, মোতালেব খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। তাঁর আয়েই পরিবারটি চলত। তাঁর অকালমৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়ল।’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মরদেহ আনার জন্য স্বজনেরা পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আগামীকাল শুক্রবার গ্রামের বাড়িতেই সবাইকে দাফন করার কথা রয়েছে।