
নিউজ ডেস্ক ।।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে যাচ্ছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়াবিষয়ক সংস্থা। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই নিম্নচাপটির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার এবং রোববার মধ্যরাতে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের সমুদ্র তীরবর্তী এবং আশপাশের অঞ্চলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে বলে আবহাওয়া বুলেটিনে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, গভীর নিম্নচাপটি এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আরও ঘনীভূত হয়ে শক্তিশালী হচ্ছে। এর প্রভাবে উপকূলে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে এর প্রভাব সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে পড়তে শুরু করবে। আর মধ্যরাত থেকে পুরোপুরি প্রভাব পড়া শুরু হতে পারে। সেজন্য সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে দুপুরে দেওয়া এক বুলেটিনে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) বলেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এরপর প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ সংলগ্ন উপকূলের স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।
আইএমডি বলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। ইতোমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অরুণাচল, আসাম ও মেঘালয়ের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের মূল প্রভাব বাংলাদেশের বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলো এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ সংলগ্ন ও এর আশপাশের অঞ্চলে পড়বে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবশ্চিমবঙ্গে ঝড়ের সম্ভাব্য তাণ্ডব মোকাবিলায় ইতোমধ্যে কোস্ট গার্ডের ১০টি জাহাজ এবং দুটি ডর্নিয়ার বিমান বঙ্গোপসাগরে মোতায়েন করা হয়েছে। বিমান থেকে বাংলা ভাষায় পাইলটরা বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করছেন।
শনিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের সর্বশেষ আপডেটে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি এই মূহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ থেকে ৪২০ কিলোমিটার দূরে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থান করছে। এর কেন্দ্রে বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার।
শনিবার (২৫ মে) বিকেলে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৭) বলা হয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.২০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৮০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ (২৫ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কি.মি.দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৭৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিপ্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।