নমশের আলম
নিজস্ব প্রতিনিধি :
শেরপুরের মুর্শিদপুর দোজা পীর সাহেবের পাক দরবার শরিফে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আহত হাফেজ উদ্দিন (৩৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যান তিনি। তিনি হামলার ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিকে দরবার শরিফে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৮ জনকে আটক করে।
আটককৃতরা হলেন- জেলার সদর উপজেলার দহরিয়াপাড় গ্রামের উসমান মিয়ার ছেলে জয়নাল (৩২), সাতপাকিয়া গ্রামের রমজান মিয়ার ছেলে শহীদ (৩৫), লছমনপুর গ্রামের ছামিদুলের ছেলে মজনু (২৬), বয়ড়া পরানপুর গ্রামের সামউদ্দিনের ছেলে এনামুল হক (৩৫), ঝাউয়েরচর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে আসিফ (১৬), কান্দা শেরীরচর গ্রামের ইদু মিয়ার ছেলে হাফেজ (৩৯), বলাইয়েরচর গ্রামের মঞ্জিল মিয়ার ছেলে জিসান (২২) ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সন্ন্যাসীভিটা গ্রামের আয়াতুল্ল্যাহর ছেলে মামুন (১৭)।
আটককৃতদের মধ্যে গুরুতর আহত হাফেজ (৩৯) ও আহত জয়নাল (৩২) ছিল। হাফেজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে মারা যায় সে।
পুলিশ, অভিযোগপত্র ও দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হতে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ও কিছু এলাকাবাসী সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকায় অবস্থিত মুর্শিদপুর দরবার শরিফে ইসলাম পরিপন্থি কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে দরবার শরীফ বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
মঙ্গলবার ভোরে মাদ্রাসা শিক্ষক মো. তরিকুল ইসলামসহ ৪০০/৫০০ লোকজন নিয়ে সোমবার ভোরে দরবার শরিফে হামলা চালায়। হামলাকারীরা দরবারের টিনের বেড়া ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। এসময় দরবারে থাকা খাদেম ও মুরিদরা তাঁদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি পেট্রোল বোমা ও অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ। সুপার ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ঘটনায় দরবার শরিফের খাদেম মাহমুদান মাসুদ বাদী হয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সুপারসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে মাদ্রাসার পক্ষ থেকেও দরবার শরিফের লোকজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে।
শেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুবায়দুল আলম বলেন, ‘এ ঘটনায় মুর্শিদপুর দরবার শরিফের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আট জনকে গ্রেপ্তার করা করেছে। পুরো ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।’
